Friday, April 3, 2020

#রাজনৈতিক ও #ধর্মীয় পরিচয় ভুলে #করোনাভাইরাস #মহামারী থেকে পরিত্রাণ পেতে #সরকার ও #জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে #একযোগে #লড়াই করা উচিত ।

শুরুতে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ একদিকে যেমন ত্রাস সৃষ্টি করেছিল আবার অন্যদিকে সকল ভারতবাসীকে ভারতীয় মানব সন্তান পরিচয়ে পরিচিত করেছিল। প্রশ্ন ছিল না কে হিন্দু,কে মুসলিম,কে বৌদ্ধ,কে খ্রিস্টান।একের আক্রান্তে অন্য জন ব্যথিত, আতঙ্কিত । এক হিন্দু ভাইয়ের আক্রান্তে যেন  মুসলিম ভাই আক্রান্ত হয়েছেন।ঠিক এভাবে এক  মুসলিম ভাইএর আক্রান্তে যেন হিন্দু ভাই  আক্রান্ত হয়েছেন । আতঙ্কের মাঝেও করোনা  মনে হয়েছিল এক সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে এসেছে ।ভারতবাসী ভুলে গিয়ে ছিল ধর্মীয় ব্যবধান। ঘ্রৃণ্য রাজনীতির ফলে যে ধর্মে ধর্মে যে প্রাচীর গড়ে উঠেছিল তার সমাপ্তি ঘটিয়ে একাকার করে ফেলেছিল । কবি নজরুলের হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোন জন-- এ ছবি প্রতিভাত হয়েছিল । এতে পূলকিত হয়েছিল মন যেন কবিগুরুর স্বপ্নের ভারততীর্থে বিবিধের মাঝে  মিলনের মাধ্যমে এক দেহে লীন হয়ে বিচরণ করছি
কিন্তু কদিন যেতে না যেতে স্বপ্নের ভারততীর্থ চূরমার হয়ে গেলো। সম্প্রীতির সুশীতল হাওয়া সহ্য করতে পারৃলো না চাটুকার গদি মিডিয়া ।কায়েমী স্বার্থবাদী গদি মিডিয়া তার ঘ্রৃণ্য সাম্প্রদায়িক খেলা শুরু করে দিল।তার মজ্জাগত হিন্দু মুসলিম বিভাজনের কার্যসূচি দিয়ে সম্প্রীতির পরিবেশ কে মারাত্মক ভাবে বিষিয়ে তুলল।তারা করোনাতে তাবলিগের গন্ধ আবিস্কার করল।এতে তাদের অন্ধ ভক্তরা  খোরাক পেয়ে গেল ও তাদের আখের গোছানোর জন্য  বিষাক্ত ছোবল মারতে লাগলো।তারা সোস্যাল মিডিয়ায়  একতরফাভাবে যা খুশি পোষ্ট করে  অপপ্রচার চালিয়ে সেই ঘ্রৃণ্য সাম্প্রদায়িক ও হিংসার পরিবেশ সৃষ্টি করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে খান খান করার অপচেষ্টায় দিন রাত লিপ্ত থাকল। মনে হলো করোনা দিয়ে লঙ্কা জয় করে নেবে।এতে দেশের সুভ বুদ্ধি সম্পন্ন জন সাধারণ মারাত্মক ভাবে আহত হতে হলো।
আসলে করোনা চীন থেকে উৎপত্তি হয়ে বিভিন্ন দেশ হয়ে ভারতে ঢুকেছে মরকজ কাণ্ডের অনেক আগেই ।অনেক সংক্রমিত হয়েছিলেন  ও অনেক লোক ও মারা গেলেন ।তখন তো করোনার সাথে কোন দলের বা সংগঠনের সংস্লিস্টতার পরিচয় ছিল না ।যারা মারা গেলেন বা সংক্রমিত হলেন তাদের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠলো না। কিন্তু মরকজে কিছু আক্রান্তের ঘটনায় হটাৎ করে করোনার সঙ্গে তাবলিগের সংস্লিস্টতার বিষয় কেন আসে ?আবার কেউ কেউ করোনা জেহাদের ভুত দেখলেন!করোনা কী ধর্ম,দল,সংগঠন দেখে ?। হতে পারে তবলিগের কিছু মানুষের সংক্রমন হয়েছে। এর আগে তো কত মানুষের সংক্রমন হয়েছে এবং সংক্রমিত ব্যক্তিও কোনো অনুষ্ঠানে অংশ গ্ৰহণ করতে দেখা গিয়েছে যা সকলেরই জানা রয়েছে।আরো কত  ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বা পাবলিক পরিসরে হাজার হাজার লোক  সরকারী নির্দেশ অমান্য করে জমায়েত হয়েছেন । আমরা এও দেখেছি  কত ধর্মীয় গুরুর করোনা নিয়ে আজগুবি পরামর্শ ও কর্মকান্ড ।এ কথা সত্য মরকজেও কয়েকশত লোক আটকা পড়েছিল ।তবে শুধু তাবলিগ তাবলিগ বলে হৈচৈ এর পেছনে কী উদ্দেশ্য ? 
নিজাম উদ্দিন এর স্ংক্রমণ এর জন্য কোনো এক পক্ষকে দায়ী করা মোটেই ঠিক নয়।কেউ কি ইচ্ছাকৃত ভাবে করোনার শিকার হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হতে চায়?এর জন্য সংস্লিস্ট সকল পক্ষের দায়িত্বহীনতা পরিলক্ষিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে ।এক শ্রেণী চায়  করোনা নিয়ে ঘ্রৃণ্য আমরা ও তোমরার রাজনীতি ।সুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক কখনও এ নোংরা রাজনীতি চায় না ।
আসল কথা হলো এ মহামারী থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার ও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এক যোগে লড়াই করতে হবে । রাজনৈতিক,ধর্মীয় পরিচয় ভুলে ও দোষারোপ ছেড়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও দায়িত্বশিলতা ও সরকারী নির্দেশকে যথাযত  পালনের মধ্য দিয়ে এ চরম সংকট থেকে পরিত্রাণ সম্ভবপর হবে ।
এখনো জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অনেকে স্বাস্থ্যবিভাগ বা সরকারী নির্দেশ অবজ্ঞা করে চলেছেন । বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও জমায়েত হচ্ছেন ।এর জন্য সচেতন নাগরিকরা এগিয়ে এসে আম জনতাকে করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে,নইলে সবাই ধ্বংসের শিকার হব।

No comments:

Post a Comment