Tuesday, April 7, 2020

স্বার্থ, স্বার্থ! তোমার মানবতা নেই কুসুম!



১৯ মার্চ - ডোনাল্ড ট্রাম্প সর্বপ্রথম পৃথিবীকে জানান যে কোভিড ১৯ এর প্রতিকারের জন্য হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও এজিথ্রোমাইসিন এর কম্বিনেশন কার্যকরী।

২২মার্চ - আমেরিকার বিভিন্ন কোম্পানি ভারতীয় ঔষধ কোম্পানিগুলিকে বিপুল পরিমাণ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন অর্ডার দিলেন।

২৪ মার্চ - আই সি এম আর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বলেন যে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন একটি কিমোপ্রোফাইল্যাকটিক (অর্থাৎ কোভিড ১৯ এর প্রোটেকশন) হিসাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের ও তাঁদের পরিবারকে দেওয়া যেতে পারে।

২৬ মার্চ - ভারত সরকার এই সহজলভ্য ড্রাগটিকে এইচ ১ তকমা দিলেন। বাজারে যেটুকু হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ছিল সেটি আউট অফ স্টক। অর্থাৎ ওষুধের দোকানে গিয়ে চাইলেই আর এই ওষুধ পাওয়া যাবে না।

৪ এপ্রিল - ভারত সরকার হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এর রপ্তানি বহির্বিশ্বের কাছে বন্ধ করে দেয়।

৪ এপ্রিল - ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যাক্তিগত ভাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন পূর্ববর্তী অর্ডারদেওয়া ওষুধের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য।

Reporter - Do you think that THE POLICY OF BANNING THE EXPORT OF DRUGS TO THE WORLD can have a retaliation? And Prime Minister Modi is doing that?
Trump - No, I have previously talked to Prime Minister Modi and requested him to release the ban on Hydroxichloroquine. Our ban has no relation with India's policy. 

এপ্রিল ৭ - Donald Trump says, "I spoke to him Sunday morning, called him, and I said, 'We'd appreciate your allowing our supply to come out.' IF HE DOESN'T ALLOW IT TO COME OUT, THAT WOULD BE OKAY, BUT OF COURSE, THERE MAY BE RETALIATION. Why wouldn't there be? I would be surprised if he would, you know, because India does very well with the United States," 

এপ্রিল ৭ - ভারত সরকার হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। বিদেশ মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেন যে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন রপ্তানি করে ভারত মহামারি আক্রান্ত দেশগুলির পাশে থাকবে।

যা দেখছি তার সবটাই যে ইতিহাস হয়ে থাকছে সে ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। আমরা পাকিস্তানের নিরিখে নিজেদের ফার্স্ট বয় ভেবে নিয়েছি বহুদিন হল। প্রাইমারি স্কুল পেরিয়ে হাই স্কুলের ক্লাসে এসে দেখলাম পরীক্ষায় পাশ করতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। শ্রেষ্ঠ আসন তো দূর অস্ত। এই মহামারি পেরিয়ে যদি একটি লোকও বেঁচে থাকে তারা মনে রাখবে মানবধর্মের নামে আমরা নিজের দেশের নাগরিককে মহামারির সামনে উলঙ্গ অবস্থায় দাঁড় করিয়ে তার লজ্জাবস্ত্রটুকু কেড়ে নিয়েছিলাম। সভ্যতা ও সংস্কৃতি মনে রাখার লোকের অভাব না পড়ে যায়। মানব ধর্মের বিত্তশালী পূজারীরা, স্কুলের পাঠ্যক্রমে পড়েছিলেন? 
"আমি কেটে - ছেঁটে যতদূর সম্ভব খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি। বেঁচে থাকতে যতটুকু দরকার খাই এবং দেশের সমস্ত লোক মরে গেলেও যদি সেইটুকু সংগ্রহ করার ক্ষমতা আমার থাকে , কাউকে না দিয়ে নিজেই আমি তা খাবো। নীতিধর্মের দিক থেকে বলছি না, সমাজধর্মের দিক থেকে বিচার করলে দশজনকে খুন করার চেয়ে নিজেকে না খাইয়ে মারা বড়ো পাপ।"

পুনশ্চঃ আমেরিকা কিন্তু এই মহামারিতে সমস্ত ধরনের ওষুধ রপ্তানি বন্ধ করেছে এবং ট্রাম্প মহাশয় বেশ ঘাড় ঝাঁকিয়ে স্টক পাইলের কথা বলছেন। আর ভারত ম্যালেরিয়ার উপদ্রবের কারণে বহুদিন ধরেই এই ওষুধ তৈরি করে আসছে। নিজের দেশে শুধু নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে এই ওষুধ অত্যন্ত কম দামে রপ্তানি করছে বিগত বহু দশক ধরে। তাই অমানবিকতার প্রশ্ন না তুললেই হয়।

যারা মিনিটে মিনিটে বিদেশ সফর, আমেরিকার সাথে বিরাট সখ্যতা ও বহি:বিশ্বে ভারতের "ইমেজ" নিয়ে গর্ব করেন তাঁরা নিশ্চই এই সাধারণ জ্ঞানের লেখাটি থেকে পজিটিভ কিছুই পাবেন। বহি:বিশ্ব এই মুহূর্তে ভারতের জনগণের মহান ত্যাগ ও মহান দানের জন্য ভারতের প্রতি এক অনন্য সম্মান প্রদর্শন ও পাকিস্তানের বাপ বাপান্ত করছেন।

No comments:

Post a Comment