Sunday, October 18, 2020

মুসলিম সমাজের বিবাহে প্রচলিত কিছু কুসংস্কার

মুসলিম সমাজে বিবাহ উপলক্ষে প্রচলিত কিছু কুপ্রথা:-

কারো গায়ে লাগলে লাগতে পারে, তবে আমাকে বলতেই হবে। আর আপনি মুসলিম হলে আপনাকে মানতেই হবে। 👏

#গায়ে_হলুদ

আমাদের সমাজে এমন ও নামধারী ইমানদার ব্যক্তি রয়েছেন যাদের নামের আগে হাজ্বী সাব, মুরব্বী সাব , মাতব্বর সাব ইত্যাদি লাগানো থাকে। মসজিদের প্রথম কাতারে দাঁড়ায় এরা, উচ্চস্বরে মাতব্বরি করে অথচ নীজের মেয়ের কিংবা ছেলের বিবাহ উপলক্ষে সম্পূর্ণ অনৈসলামিক কুপ্রথা চালাতে এরা মোটেও দ্বিধাবোধ করে না। গায়ে হলুদ নামক অনুষ্ঠানটি মুসলিম বিবাহ উপলক্ষে সম্পূর্ণ অবৈধ হারাম নাযাইঝ। অথচ অনেক মুসলিম এটাকে খুশীর মধ্য দিয়ে বর-কনেকে হলুদ জামা-কাপড় পরিয়ে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান অনাড়ম্বর ভাবে উদযাপন করে যা শরীয়ত সম্মত ভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ। তাদের কাছে কোন যুক্তি নাই তবুও বাধা দিতে দেখিনা। আবার পাক্কা ইমানদার হিসাবে নিজেকে দাবি করতে এরা পিছপা হয় না। 
বিয়ে-শাদীতে গায়ে হলুদের নিয়ম বর্তমান সময়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ আকার ধারণ করেছে। আমি নিজে দেখেছি আমাদেরই বরাক উপত্যকায় এই প্রথা মুসলিম সমাজে এখনো প্রচলিত রয়েছে। গায়ে হলুদকে কেন্দ্র করে অনেক আয়োজন, অনুষ্ঠান, গান বাজনা ও বেপর্দা মেলামেশা আমাদের মুসলিম সমাজে এখনো হয়। অথচ ইসলামী শরীয়তে গায়ে হলুদের কোন নিয়ম নেই। আপনি প্রভাবশালী, আপনি গ্রামের মুড়ল/মুরব্বী , আপনি এমলএ মন্ত্রী তাই আপনার ছেলে-মেয়ের বিয়েতে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করতে হবে তাই? বেটা এখানে আপনার মাতব্বরি দেখানোর সুযোগ নাই । মুসলিম দাবি করলে শরীয়ত পরিপূর্ণ মানতে হবে আপনাকে। কোথায় পেয়েছেন এসব ভন্ডামি শরীয়তের কোথায় পেয়েছেন গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান বৈধ? দেখাতে পারবেন ? তাহলে কেন করছেন অন্যকে বাঁধা ও দিচ্ছেন না এবং নিজেও করছেন!!

#মোহরানা_আদায়

বর্তমান নতুন ট্রেন্ড চালু হয়েছে ধনীর ছেলে মোহরানা না দিয়ে টাকার দাম্ভিকতায় উপহার সামগ্রী মোহরানা থেকেও বেশী দেয়। অথচ মোহরানা আদায় করা বিবাহের অন্যতম একটি শর্ত । তা পূরন না করে লক্ষ টাকার সামগ্রী উপহার দিচ্ছে। নিজের দাম্ভিকতা-আতম্ভরিতা ত্যাগ করুন শরীয়তকে প্রাধান্য দিন বরকত আসবে। যা করার তা করুন তারপর মন চাইলে নিজের বাসস্থান উঠিয়ে নিয়ে উপহার হিসেবে দিয়ে দিন কোন অসুবিধা নাই। তবে প্রাপ্যটা আদায় করতে হবে আপনাকে।

#নির্দিষ্ট_দিন_তারিখ_দেখে_বিয়ে_করাঃ-

শরীয়তে এধরনের কোন বাঁধা বিপত্তি নাই যে, বিবাহের ক্ষেত্রে চন্দ্র মাসের অমুক তারিখ, তমুক তারিখ হতে হবে। অনেকে আবার শনিবার, মঙ্গলবারে বিবাহের তারিখ ধার্য করতে বাঁধার সৃষ্টি করেন । শনিবার নাকি শনির দশা, মঙ্গলবার নাকি মঙ্গলের দশা নায়ুঝুবিল্লাহ। এরকম কোন নিয়মাবলী শরীয়তে নাই । সম্পূর্ণ বানাওয়াট কুপ্রথা এগুলা। 

#কদমবুসি_করাঃ-

বর ও কনের মুরব্বিদের কদমবুসি করা একটি মারাত্মক কু-প্রথা। বিয়ে কেন যেকোনো সময় পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা যাবেনা । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবা (রাঃ) আনহুম আজমায়ীন থেকে এর কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বেশী সম্মান দেখাতে গিয়ে শরীয়তের গন্ডি থেকে বেরিয়ে যাওয়া কোথায় পেয়েছেন মশাই? 

এভাবে বর্তমান সময়ে বিয়ে শাদীতে বহু অনিয়ম চালু রয়েছে। বিধর্মীদের নিয়ম কানুন মুসলিম সমাজের মানুষের রন্ধ্রে রন্ধে ঢুকে পড়েছে। বিবাহটা যে একটা ধর্মীয় কাজ সেটা আর কেউ মোটেও খেয়াল করছে না। আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন আমীন।

ক্রমশঃ

No comments:

Post a Comment