Thursday, July 4, 2024

☆☆☆ সরকারের অবহেলায় কৃত্রিম বন‍্যার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বৃহত্তর লাফাশাইলবাসীকে ☆☆☆ খরা, ভূমিকম্প, ভূমিস্খলন ও বন‍্যা ইত্যাদি হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু বৃহত্তর লাফাশাইল এলাকার জন্য প্রতিবছরের বন‍্যাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলা যাবে না। কারণ ২০০৬-০৭ সালে ভারত সরকার যখন লক্ষ্মীবাজার BSF Camp থেকে বর্তমান ২৮ নম্বর গেইট পর্যন্ত সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে তখন বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ দায়সারা মনোভাব নিয়ে ফ্লাড লেভেল থেকে অনেক নীঁচু করে কাজ সম্পাদন করে। তৎকালীন ডিসি অনুরাগ গোয়েল মহাশয়, ত‍ৎকালীন বিধায়ক মিশন রঞ্জন দাস মহাশয় ও কাজের বরাত প্রাপ্ত সংস্থা NBCC কর্তৃপক্ষের কাছে সড়কটি উঁচু করার দাবি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয় নি। পরবর্তীতে ২০১১ সালে যখন কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ মহাশয় বিধায়ক নির্বাচিত হন তখন এলাকার লোকজন কিছুটা আশা পোষণ করেছিলেন হয়তো বা কিছু একটা হবে। কিন্তু উনারও দু-দুটি কার্যকাল সমাপ্ত হয়ে তৃতীয় কার্যকালের সিংহভাগ সময় অতিবাহিত হলেও সীমান্ত সড়ক উঁচু করার ব‍্যাপারে কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয় নি। সীমান্ত সড়ক নির্মানাধীন সময়ের ডিসি অনুরাগ গোয়েল মহাশয় এক্ষেত্রে খলনায়ক হিসেবে অত্র এলাকার জনমানসে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ২০০৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রতিবছর কুশিয়ারা নদীর জল বিপদসীমা পার করলেই বৃহত্তর লাফাশাইল এলাকার লোকালয়ে সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে জল প্রবেশ করে। এ যেন প্রতিবছরের আপদ অতিথি হিসেবে পরিগণিত হতে চলেছে। বরাক উপত‍্যকার আর কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ বন‍্যা না হলেও লাফাশাইলের জনগণকে এ যেন খাল কেটে কুমির আনা কৃত্রিম বন‍্যার কবলে পড়তে হয়। ফলে প্রতিবছর এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র্য সীমারেখার নীচে বসবাসকারী ও গরিব কৃষকদের হাজার-হাজার ও লক্ষ-লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, প্রতিবছর নিদেনপক্ষে দুই থেকে তিনবার কুশিয়ারা নদীর জল সীমান্ত সড়ক টপকিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। যার ফলে গরিব মেহনতি মানুষদের একমাত্র মাথা গোজার ঠাই বসত ঘরগুলোও একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি গৃহপালিত পশুদেরও খাদ‍্যাভাব দেখা দেয়। এক্ষেত্রে সরকারি তরফে আংশিক ক্ষয়ক্ষতির কিছুটা ক্ষতিপূরণ প্রদান করলেও তা স্বজন-পোষণের মাধ‍্যমে বণ্টন হয়ে প্রকৃত হিতাধিকারীরা চিরাচরিতভাবে বঞ্চিত থেকেই চলেছেন। প্রসঙ্গত কুশিয়ারা নদীর জল টপকানোর পরপরই মাননীয় বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ মহাশয় উপস্থিত হয়ে প্রতিবছরই জলসম্পদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ ও ডিসি মহোদয়কে এলাকা পরিদর্শন করে বিহিত ব‍্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করিয়ে থাকেন। বিভাগীয় তরফে হাতে গোনা কয়েকটি বস্তা দিয়ে মাটি ভরাট করে পুঁতে রেখে দায় সারেন। এক্ষেত্রে উল্লিখিত এলাকার লাফাশাইল ২য় খণ্ড গ্রাম তথা লক্ষ্মীবাজার জিপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডেই সবগুলো শেষ হয়ে যায়। কিন্তু লাফাশাইল ৩য় খণ্ড গ্রাম তথা লক্ষ্মীবাজার জিপির ১ নম্বর ও ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এর ছিটেফোঁটা দেয়া হয় না। তবে অবশ‍্য সীমান্তে প্রহরারত BSF কর্তৃপক্ষ সব এলাকায় যথেষ্টভাবে সমান সহযোগিতা করে থাকে। যাইহোক, বৃহত্তর লাফাশাইল এলাকার এ জ্বলন্ত সমস‍্যাটি যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন। এ হিসেবে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের মাননীয় সাংসদ কৃপানাথ মাল্লাহ মহাশয়কে আমরা এ বিষয়ে অবগত করালেও তিনি আজ পর্যন্ত এ এলাকায় উনার পা মাড়ান নি। আমি আশাকরি, আমার এ প্রতিবেদন যদি উনার নজরে আসে তবে উনি স্বশরীরে পদার্পণ করে বিহিত ব‍্যবস্থা গ্রহণ করতে সচেষ্ট হবেন। তৎসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন‍্যা নয় কৃত্রিম বন‍্যার করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করতে মাননীয় সাংসদ মহোদয়ের কাছে বৃহত্তর লাফাশাইলবাসীর পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।Kripanath Mallah

☆☆☆ সরকারি অবহেলায় প্রতিবছর কৃত্রিম বন‍্যার দুর্ভোগ পোহাতে হয় বৃহত্তর লাফাশাইলবাসীকে ☆☆☆



খরা, ভূমিকম্প, ভূমিস্খলন ও বন‍্যা ইত্যাদি হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু বৃহত্তর লাফাশাইল এলাকার জন্য প্রতিবছরের বন‍্যাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলা যাবে না। কারণ ২০০৬-০৭ সালে ভারত সরকার যখন লক্ষ্মীবাজার BSF Camp থেকে বর্তমান ২৮ নম্বর গেইট পর্যন্ত সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে তখন বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ দায়সারা মনোভাব নিয়ে ফ্লাড লেভেল থেকে  অনেক নীঁচু করে কাজ সম্পাদন করে। তৎকালীন ডিসি অনুরাগ গোয়েল মহাশয়, ত‍ৎকালীন বিধায়ক মিশন রঞ্জন দাস মহাশয়  ও কাজের বরাত প্রাপ্ত সংস্থা NBCC কর্তৃপক্ষের কাছে সড়কটি উঁচু করার দাবি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয় নি। পরবর্তীতে ২০১১ সালে যখন কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ মহাশয় বিধায়ক নির্বাচিত হন তখন  এলাকার লোকজন কিছুটা আশা পোষণ করেছিলেন হয়তো বা কিছু একটা হবে। কিন্তু  উনারও দু-দুটি কার্যকাল সমাপ্ত হয়ে তৃতীয় কার্যকালের সিংহভাগ সময় অতিবাহিত হলেও সীমান্ত সড়ক উঁচু করার ব‍্যাপারে কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয় নি। সীমান্ত সড়ক নির্মানাধীন সময়ের ডিসি অনুরাগ গোয়েল মহাশয় এক্ষেত্রে খলনায়ক হিসেবে অত্র এলাকার জনমানসে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ২০০৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রতিবছর কুশিয়ারা নদীর জল বিপদসীমা পার করলেই বৃহত্তর লাফাশাইল এলাকার লোকালয়ে সীমান্ত সড়ক ও কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে জল প্রবেশ করে। এ যেন প্রতিবছরের আপদ অতিথি হিসেবে পরিগণিত হতে চলেছে। 
              বরাক উপত‍্যকার আর কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ  অর্থাৎ বন‍্যা না হলেও লাফাশাইলের জনগণকে এ যেন খাল কেটে কুমির আনা কৃত্রিম বন‍্যার কবলে পড়তে হয়। ফলে প্রতিবছর এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র্য  সীমারেখার নীচে বসবাসকারী ও গরিব কৃষকদের হাজার-হাজার ও লক্ষ-লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। 
                উল্লেখ্য, প্রতিবছর নিদেনপক্ষে দুই থেকে তিনবার কুশিয়ারা নদীর জল সীমান্ত সড়ক টপকিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে। যার ফলে গরিব মেহনতি মানুষদের  একমাত্র মাথা গোজার ঠাই বসত ঘরগুলোও একেবারে দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি গৃহপালিত পশুদেরও খাদ‍্যাভাব দেখা দেয়। এক্ষেত্রে সরকারি তরফে আংশিক ক্ষয়ক্ষতির  কিছুটা ক্ষতিপূরণ প্রদান করলেও তা স্বজন-পোষণের মাধ‍্যমে বণ্টন হয়ে প্রকৃত হিতাধিকারীরা চিরাচরিতভাবে বঞ্চিত থেকেই চলেছেন। প্রসঙ্গত কুশিয়ারা নদীর জল টপকানোর পরপরই মাননীয় বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ  মহাশয় উপস্থিত হয়ে প্রতিবছরই জলসম্পদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ  ও ডিসি মহোদয়কে এলাকা পরিদর্শন করে বিহিত ব‍্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করিয়ে থাকেন। বিভাগীয় তরফে হাতে গোনা কয়েকটি বস্তা দিয়ে মাটি ভরাট করে পুঁতে রেখে দায় সারেন। এক্ষেত্রে  উল্লিখিত এলাকার লাফাশাইল ২য় খণ্ড গ্রাম তথা লক্ষ্মীবাজার জিপির ৪ নম্বর  ওয়ার্ডেই সবগুলো শেষ হয়ে যায়। কিন্তু লাফাশাইল ৩য় খণ্ড গ্রাম তথা লক্ষ্মীবাজার জিপির ১ নম্বর  ও ২ নম্বর  ওয়ার্ড এলাকায় এর ছিটেফোঁটা দেয়া হয় না। তবে অবশ‍্য সীমান্তে প্রহরারত BSF কর্তৃপক্ষ সব এলাকায় যথেষ্টভাবে সমান সহযোগিতা করে থাকে। 
            যাইহোক, বৃহত্তর লাফাশাইল এলাকার এ জ্বলন্ত সমস‍্যাটি যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন। এ হিসেবে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের মাননীয় সাংসদ কৃপানাথ মাল্লাহ মহাশয়কে আমরা এ বিষয়ে  অবগত করালেও তিনি আজ পর্যন্ত  এ এলাকায়  উনার পা মাড়ান নি। আমি আশাকরি, আমার এ প্রতিবেদন যদি উনার নজরে আসে তবে উনি স্বশরীরে পদার্পণ করে বিহিত ব‍্যবস্থা গ্রহণ করতে সচেষ্ট হবেন। তৎসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন‍্যা নয় কৃত্রিম বন‍্যার করাল গ্রাস থেকে মুক্ত করতে মাননীয় সাংসদ মহোদয়ের কাছে বৃহত্তর লাফাশাইলবাসীর পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
Kripanath Mallah

Monday, November 6, 2023

◆◆◆ ইসলামে জাতিভেদ নেই, তথাকথিত জাতিভেদ দূরীকরণে চাই আলোচনা সভা/ সেমিনার ও ওয়াজ মাহফিল ◆◆◆N.B: গঠণমূলক কমেন্ট ছাড়া বিরত থাকবেন। ইসলামে জাতিভেদের কোনও স্থান নেই। কিন্তু বরাক উপত‍্যকার মুসলিম সমাজে তথাকথিত জাতিভেদ আছে যা কেউ এক্কেবারে অস্বীকার করতে পারবেন না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মামার শ্রুতলিপি অনুকরণে তথাকথিত জাতিভেদ বিতর্ক তথা Divide and rule policy অত্যন্ত নিন্দনীয়। কারণ যে সময়ে ভারতবর্ষের সংবিধান বিপদ সংকুল পরিস্থিতির সম্মুখীন। এ সময়ে সবাইকে বন‍্যার সময় পিঁপড়েরা যে ভুমিকা পালন করে তা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যখন গোটা ভারতবর্ষের জাতি-ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে লোকজন সংবিধান বাঁচানোর লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে চলেছেন, তখন এমন জাতের নামে বজ্জাতির বিতর্ক মোটেও শোভনীয় নয়। মোদ্দাকথা- ইসলামে জাতিভেদের কোনও স্থান নেই। তথাপিও যারা উচ্চ জাত বলে নিজে নিজেকে গর্ববোধ করে ও অপরজন নীচ জাত বলে নিজে নিজেকে অপমানিতবোধ করে ও তথাকথিত উচ্চ জাতের দ্বারা নীচ জাত বলে কোথাও কটাক্ষের বলি হন , তা সভ‍্যসমাজে মোটেও কাম‍্য নয়। বরাক উপত‍্যকার মুসলিম সমাজে প্রচলিত টাইটেল বা উপাধি সমূহ কোনও বংশানুক্রমিক বা জন্মগত নয়। সবগুলো উপাধিই হচ্ছে তৎকালীন প্রদত্ত পেশার ভিত্তিতে অর্জিত উপাধি। আমি প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, কাউকে কটাক্ষ করার কোনো অভিপ্রায় নেই, তথাপি উদাহরণস্বরূপ বলছি - ধরে নিন, একজন তালুকদার বা তালুকের মালিক, উনার চারজন ছেলে। উনি মারা যাওয়ার পর ওই চারজন ছেলে বাবার নামের তালুকটি নিজেদের মধ্যে চারভাগ করে নিল। এখন ওই ছেলেদেরকে " পূর্ণ তালুকদার " না বলে "পোয়া তালুকদার" বলতে হবে। আর যদি দুই ছেলে রেখে যান- তবে "আধা তালুকদার "। তাই অর্জিত উপাধি নিয়মানুযায়ী উত্তরাধিকারীরা ব‍্যবহার করতে পারেন না। অপরদিকে আমি নিজে নিজেকে মাইমাল বা মৎস‍্যজীবী হিসেবে দাবী করি। তা কিন্তু ১০০ শতাংশ শুদ্ধ ও সঠিক নয়। কারণ আমি মাছ ধরা / শিকার করি না। আমার আব্বা বা ভাই কেউ এসব করেন না। অথচ মাছের ব‍্যবসাও করি না। তাই পেশার ভিত্তিতে অর্জিত উপাধি হিসেবে আমাকে কেউ মাইমাল বা মৎস‍্যজীবী বললে সাংঘাতিক ভুল হবে বলে মনে করি। যাইহোক, ইতিপূর্বে অনেক বিতর্কতে আমি নিজেও শামিল হয়েছিলাম। এখন দেওয়ালে পিঠ লেগেছে। তাই অযথা আশরাফ - আতরাফ বিতর্ক না করে গঠণমূলক পদ্ধতিতে সেমিনার /ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদি বিষয়ভিত্তিক আয়োজন করে ইসলামিক/সাধারণ শিক্ষিত স্কলারদের মাধ‍্যমে ক্বোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ইসলামে জাতিভেদ আদৌ নেই বলে জনসমক্ষে তা তুলে ধরতে হবে। অন‍্যথায় ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এর খেসারত দিতে হবে। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে বরাক উপত‍্যকার প্রতিটি মহল্লার সবকটি ওয়াজ মাহফিলে এনিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু দিয়ে তথাকথিত জাতিভেদ নির্মূলকরণে অগ্রণী হই। নহে আশরাফ শুধু যার আছে বংশের পরিচয়। সেই আশরাফ যার জীবন পূণ্য কর্মময়।।

Thursday, May 18, 2023

◆◆◆বাংলা ভাষা আন্দোলনে মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরীর অবদান◆◆◆ পৃথিবীতে কত ভাষা কত জাতি তার সঠিক কোন হিসেব নেই। বিভিন্ন জাতির বিভিন্ন ভাষা। কারো ইংরাজি, কারো হিন্দি, কারো আরবি, কারো বাংলা প্রভৃতি এরকম প্রায় চৌদ্দ হাজার ভাষা এজগতে প্রতিষ্টা লাভ করেছে। শুধুমাত্র আমাদের দেশ ভারতবর্ষে ১৬৫৭ টি ভাষা উপভাষা বিদ‍্যমান রয়েছে। তা থেকে কিছু ভাষা জাত- উপজাত হয়ে এসেছে। এতে কোনো কোনো ভাষা এমনিতেই বিনা সংগ্রাম বা আন্দোলনে প্রতিষ্টিত হয়েছে। আবার কোনো কোনো ভাষা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ‍্যমে প্রতিষ্টা লাভ করেছে। তন্মধ্যে বাংলা ভাষা অন‍্যতম। ১৯৬০ সালে আসাম বিধানসভায় চালিহা সরকারের শাসনামলে ভাষা বিল গৃহীত হয়। ফলে আসাম সরকার বলপূর্বক রাজ‍্যের সবকটি জেলার অফিস আদালতের কাজে অসমীয়া ভাষা চালু করার নির্দেশ জারি করে। এহেন পরিস্থিতিতে অত‍্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে অসমীয়া ভাষা চালু করার প্রতিবাদে বরাক উপত‍্যকায় একটি সমন্বয় কমিটি গঠণ করা হয়। এতে আব্দুর রহমান চৌধুরীকে সভাপতি ও নলিনীকান্ত দাসকে সাধারণ সম্পাদক সহ ত্রিশ সদস্য বিশিষ্ট কাছাড় গণ সংগ্রাম পরিষদ নামে এক বলিষ্ট কমিটি গঠণ করা হয়। বৃহত্তর আন্দোলনে তৎকালীন করিমগঞ্জ মহকুমায় সংগ্রাম পরিষদের স্টিয়ারিং কমিটি গঠণ করা হয়। এতে আসাম বিধানসভার ছয়বারের বিধায়ক, দেওরাইল টাইটেল মাদ্রাসা বদরপুরের অধ‍্যক্ষ তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেবকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। তিনি বরাক উপত‍্যকার বিভিন্ন স্থানের সভা সমিতিতে উপস্থিত হয়ে জ্বালাময়ী ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে গণচেতনায় মানবমণ্ডলীকে উদ্বুদ্ধ করেন। সেসময় একাংশ উলামায়ে কেরাম ভাষা আন্দোলনের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু প্রয়াত মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেব সেসব উলামায়ে কেরামগণকে বলেছিলেন- “ মাতৃভাষাকে যারা শ্রদ্ধা করে না তারা ঈমানের দাবিদার হতে পারে না।” শিলচর শহরের উপকণ্ঠে সোনাই বাজারে ভাষণ দান শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে শালচাপড়ায় কতিপয় দুষ্কৃতির চক্রান্তে পড়ে প্রাণ হারাতে বসেছিলেন। এরকম বিভিন্নভাবে মাওলানা জলিল সাহেব ভাষা সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৬১ সালের ঐতিহাসিক ১৯ শে মে শিলচর রেল স্টেশনে পুলিশের গুলিতে ভাষা প্রেমিক এগারোটি তরুণ তাজা প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়ার পর তাদের অন্ত‍্যেষ্টিক্রিয়ার দিন বরাক উপত‍্যকার প্রতিটি সংগ্রাম কমিটির অফিসে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ‍্যমে দেশীয় প্রথায় তাদের আত্মার সদ্গতি কামনা করা হয়। এ উপলক্ষে বদরপুরে সংগ্রাম কমিটির অফিসে প্রয়াত মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেবের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত স্মৃতিচারণ সভায় মাওলানা নয়ীম উদ্দিন সাহেব ক্বোরআন পাঠ করেন। বিরুদ্ধবাদীরা একাজ ধর্মবিরোধী আখ‍্যা দিয়ে প্রয়াত মাওলানা সাহেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন। এর প্রতিবাদে মাওলানা সাহেবের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করে ১৯৬১ সালের ১৫ ই জুলাই শিলচর থেকে হাফিজ আহমদ আলী হাজারি, মুকাব্বির আলী মজুমদার, নিজাম উদ্দিন হাজারি প্রমুখ বিশিষ্ট ব‍্যক্তিবর্গ “ অপপ্রচারের প্রতিবাদ” শীর্ষক একটি আবেদনপত্র প্রচার করেন। অনুরূপভাবে ১৯৬১ সালের ৭ই আগষ্ট বদরপুর থেকে হাজি আব্দুল জব্বার, মৌলভী আজির উদ্দিন, আহসানুর রাজা চৌধুরী, আতাউর রহমান (মায়া মিয়া) ও আব্দুল মালিক প্রমুখ নেতৃস্থানীয় ব‍্যক্তিবর্গ “অসত‍্য গুজবের প্রতিবাদ” শীর্ষক একটি আবেদনপত্র প্রচার করে প্রয়াত মাওলানা সাহেবের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ খণ্ডন করেন। বরাক উপত‍্যকার ভাষা সংগ্রাম আন্দোলনে অবশেষে তৎকালীন দিল্লি সরকারের টনক নড়ে। প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু তদানীন্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে ভাষা আন্দোলনের কারণ ও প্রতিকার মূল‍্যায়নের জন‍্য শিলচরে পাঠান। শাস্ত্রীজী ভাষা আন্দোলনের নেতৃবর্গের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট এক প্রতিনিধিদলকে দিল্লি যাওয়ার জন‍্য আমন্ত্রণ জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে শিলচরের খ‍্যাতনামা আইনজীবী তথা আসামের প্রাক্তন মন্ত্রী প্রয়াত আলতাফ হোসেন মজুমদার, মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী ও প্রয়াত রথীন্দ্রনাথ সেন দিল্লিতে যান। প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি পুলিশের গুলি চালনায় এগারোটি তরতাজা প্রাণ নিহত হওয়ার ঘটনায় নেতৃবৃন্দের উপর রাগে অগ্নিশর্মা হন। সেই মূহুর্তে প্রতিনিধিদলের অন‍্য দুজন সদস‍্যের অনুরোধে মাওলানা জলিল সাহেব তার স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্যে উর্দুভাষী প্রধানমন্ত্রীকে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, গুলিচালনার ঘটনার রহস্য ও কুচক্রান্তকারীদের ষড়যন্ত্র সম্বন্ধে যথেষ্ট তথ‍্যাদি উপস্থাপন করে, বাংলা ভাষাকে সরকার স্বীকৃতি না দিলে তার ভয়ংকর পরিণতি সম্বন্ধে এমনভাবে অবহিত করেন যে, নেহেরুজী বাংলা ভাষার স্বীকৃতিদানে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে মাওলানা সাহেবের মাধুর্য‍্যপূর্ণ আলোচনায় মুগ্ধ হয়ে হাসিমুখে বিষয়টির খুটিনাটি ব‍্যাপার নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সহিত আলোচনার শাস্ত্রী ফরমূলা তৈরি হয়। ফরমূলা অনুযায়ী দশ বছরের জন‍্য অসমীয়া ভাষার সহিত বাংলা ভাষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয় এবং পুলিশের গুলি চালনার তদন্তের জন্য মেহেরোত্রা কমিশন গঠিত হয়। ফলে ভাষা আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত হয়। দশ বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৯৭২ সালে আসাম মাধ‍্যমিক শিক্ষা পর্ষদ আসামের সমগ্র মাধ‍্যমিক স্কুলসমূহে অসমীয়া ভাষা বাধ‍্যতামূলক করে নির্দেশনামা জারি করায় আবার ভাষা আন্দোলনের উত্থান ঘটে। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদানের জন‍্য মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেবকে অনুরোধ করা হয়। সকলের অনুরোধে সাড়া দিয়ে তিনি শাসকদলের বিধায়ক হওয়া সত্বেও রাজ‍্য সরকারের বিরুদ্ধে পরিচালিত এ আন্দোলনে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতির গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন। মাওলানা সাহেবের নেতৃত্বে পরিচালিত এ আন্দোলনে প্রায় দুমাস সরকারি সমস্ত কাজকর্ম অচল হয়ে যায়। ইতিমধ্যে আসাম বিধানসভায় বাজেট অধিবেন আরম্ভ হয়। সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরাক উপত‍্যকার মন্ত্রীসহ ১৪জন বিধায়ককে বাজেট অধিবেশন বয়কটের অনুরোধ জানানো হয়। এ আন্দোলনের ফলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে,সি,পন্থ শিলং গোল টেবিল বৈঠকে মাওলানা চৌধুরী সাহেব সহ সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানান। এ আলোচনায় মাওলানা সাহেব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গঠণমূলক ভূমিকা গ্রহণ করেন। গোল টেবিল বৈঠকে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক পন্থ চুক্তির ফলে বাংলাভাষী জনসাধারণের মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ লাভে ধন‍্য হন। মাওলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী সাহেবের বলিষ্ট নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন সাম্প্রদায়িক কলহ থেকে মুক্ত থাকে। সর্বত্র প্রয়াত মাওলানা সাহেবের জয়গান চলতে থাকে। বর্তমানেও বিভিন্ন সময়ে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন অব‍্যাহত রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে প্রয়াত মাওলানা সাহেবের বলিষ্ট নেতৃত্ব বরাক উপত‍্যকাবাসী আজও অভাববোধ করছে।🖋🖋🖋মুহাম্মদ আব্দুল ওয়ারিস🖋🖋🖋 লাফাশাইল।

Thursday, April 13, 2023

এক নজরে মাওলানা রাবে হাসানী নদভী রহঃ

কে এই শায়খ মুহাম্মদ রাবি' হাসানী নদবী রহ. 
(জন্ম ১৯২৯- মৃত্যু ২০২৩ ইং) 

কে হবেন তিনি যিনি অর্ধ-মাসিক আরবি পত্রিকা আল-রাঈদ জুলাই ১৯৫৯ ইংরেজিতে প্রতিষ্ঠা করে এপ্রিল ২০২৪ ইং পর্যন্ত একটানা প্রায় পয়ষট্টি বছর সম্পাদনা করেন! কে লেখেননি তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই পত্রিকায়! ইমাম হাসান আল-বান্না, সৈয়ীদ কুতুব শহীদ, আবুল হাসান আলী নদবী, ক্বারী তৈয়ীব ক্বাসিমী, জামালুদ্দীন আতিয়্য়াহ, আব্দুল হামিদ হামুদাহ, সৈয়ীদ আফিফ জাযাইরী, আব্দুল জলীল হাসান কুয়ালালামপুরী, ড. ইসহাক আহমাদ ফারহান জর্ডানী, মুহাম্মদ হাসানী রহ.গণের মত শতশত বিশ্বখ্যাত ইসলামী পন্ডিতগণ! 

কে হবেন তিনি যিনি শিষ্যত্ব অর্জনের সুযোগ পেয়েছিলেন সমকালের সেরা ইসলামী স্কলারদের! আলিফ-বা-তা-ছা তো মামা বিশ্ববরণ্য ইসলামী পন্ডিত সৈয়ীদ মাওলানা আবুল হাসান আলী নদবীর হাতেই! অতঃপর শাহ মুহাম্মদ হালিম আ'তা, মুফতি মুহাম্মদ সাঈদ, সৈয়ীদ হামিদুদ্দীন, মুহাম্মদ উয়াইস নিগরামী, মুহাম্মদ নাজিম নদবী, শায়খ আবরারুল হক হাক্কী, শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানী, শায়খ জাকারিয়া কান্দলাবী, শায়খ আব্দুল কাদীর রায়পুরী রহ. প্রমুখ বিশ্ববরেণ্য উসতাদগণের কাছে! কে হবেন তিনি দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামা, লক্ষ্ণৌ, দারুল উলুম দেওবন্দ, মুযাহিরুল উলুম সাহারানপুর ও হিজাজে মুকাদ্দস হয় যার শিক্ষার্জন স্থল! 

কে হবেন তিনি যিনি আরবি ভাষা, সাহিত্য ও তাঁর ইতিহাস, সমালোচনা সাহিত্য, ইসলামী সাহিত্য, ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা ও তাঁর ইতিহাস, প্রাচ্য ও পশ্চিমা সংস্কৃতি , মতবাদ ও সাহিত্যের উপর বছরের পর বছর রচনা করেছেন আরবি ও উর্দু ভাষায় শতশত প্রবন্ধ, চল্লিশের অধিক বই ও হাজারো বক্তৃতা! 

কে হবেন তিনি যিনি একটানা দীর্ঘ পচাত্তর বছর; ১৯৪৯ থেকে ২০২৪ ইং, দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামার মত বিশ্বমানের প্রতিষ্টানে শিক্ষকতা করার গৌরব অর্জন করেছেন! ঐ প্রতিষ্ঠানের আরবি বিভাগের প্রধান হিসাবে ১৯৫৫ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত, আরবি সাহিত্য কলেজের ডিন হিসাবে ১৯৭০ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত, প্রতিষ্ঠানের নবম মুহতামিম  (প্রিন্সিপাল/রেজিস্টার) হিসাবে ১৯৯৩ থেকে ২০০০ পর্যন্ত এবং সবশেষে ঐ প্রতিষ্ঠানের অষ্টম আচার্য হিসাবে ২০০০ ইং থেকে একটানা চব্বিশটি বছর দায়িত্ব আদায় করেছেন! 

কে হবেন তিনি যিনি ভারতীয় মুসলমানের ঐক্যবদ্ধ ছাতা অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল লো বোর্ডের দীর্ঘ ২২ বছর; ২০০২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সভাপতির আসন অলংকৃত করার যোগ্যতা রাখেন!  

কে হবেন তিনি যিনি ভারত ও বহির্ভারতের আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেওয়ার ও প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা রাখতেন। তিনি ছিলেন অল-ইন্ডিয়া ফিক্বহ একাডেমির পৃষ্ঠপোষক,  রাবেতা আদবে ইসলামী, রিয়াদ এর সহসভাপতি, মাজলিসুল ইলমী ইসলামী, লক্ষ্ণৌ এর সভাপতি, মাজলিসুস সিহাফাত ও নাশর (পাবলিকেশন্স) এর সভাপতি, উত্তর প্রদেশ দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি, দারে আরাফাত (পাবলিকেশন্স) এর সভাপতি, রাবেতা আলমে ইসলামী, মক্কা এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, দারুল মুসান্নিফিন (রাইটার্স একাডেমি) আজমগড় এর সদস্য, অক্সফোর্ড সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজ, লন্ডন এর ট্রাস্টি, পিয়ামে ইনসানিয়ত মিশনের ডিরেক্টর! 

কে হবেন তিনি যিনি ইসলামী দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া সবকটি মহাদেশের বিভিন্ন দেশে গিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদানের গৌরব অর্জন করতে পারেন!

কে হবেন তিনি যার মা আমাতুল আজিজ হন সৈয়ীদ আবুল হাসান আলী নদবী ও ড. আব্দুল আলী নদবী রহ.গণের বোন! যার নানা হন ড. আব্দুল হাই হাসানী রহ. যিনি সারা জীবন শিক্ষকতা করে কোনো বিনিময় নেননি! যার বাবা হন প্রখ্যাত আলিমে দীন সৈয়ীদ রাশিদ আহমাদ আল-হাসানী রহ! যিনি ছিলেন উত্তর প্রদেশের প্রখ্যাত শাহ ইলমুল্লাহ পরিবারের চেরাগ! যে পরিবার শতশত ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব এই ভারতকে উপহার দিয়েছে, যাদের ছাড়া এদেশের দীন ইসলামের খিদমাতের ইতিহাস অসম্পূর্ণ! তার ভাইদের সবাই ছিলেন আরবি ও ইসলামী সাহিত্যের পন্ডিত। যার ছোট ভাই মুহাম্মদ ওয়াযিহ রাশিদ নদবী রহ. আপন ছোট মামা আলী মিয়া নদবী রহ. এর ডাকে সাড়া দিয়ে অল-ইন্ডিয়া রেডিওর চোখ ধাঁধানো বেতনের চাকরি উপেক্ষা করে অল্পে তুষ্ট হয়ে দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামায় দীন ইসলামের খিদমাতে সারা জীবন ব্যয় করেন। যার সমবয়সী মামাতো ভাই মুহাম্মদ হাসানী রহ. বিশ্বনন্দিত আরবি পত্রিকা "আল-বা'ছ আল-ইসলামী" প্রতিষ্ঠা করে আরব বিশ্বের তাবড় তাবড় ইসলামী ব্যক্তিত্বদদের সাথে ভারতীয় মুসলিম উম্মাহের নিবিড় ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে তাদের কাছে প্রতি মাসে ভারতীয় মুসলমানের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন! যা আজ অবধি সগৌরবে প্রকাশ হচ্ছে। তিনি ঐ পরিবারের সন্তান যে পরিবারের উর্ধ-পুরুষের একজন ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলামী রিফর্মার সৈয়ীদ আহমাদ রায়বেরেলবী শহিদে বালাকোট রহ. !

পরিশেষে, তার একটি অমর বাণী দিয়ে এই সংক্ষিপ্ত লেখার ইতি টানছি: "যেদিন মিডিয়ার উপর মুসলমানদের কর্তৃত্ব আসবে সেদিনটি নিঃসন্দেহে শুধু মুসলমানদের জন্যই নয়, বাকি বিশ্বের জন্য একটি ভালো দিন হবে।" মহান আল্লাহ যেন দুনিয়া আখিরাতে তাঁর দরজা আরও বুলন্দ করেন। আমীন।।

Sunday, January 15, 2023

ক্বওমী মাদ্রাসা সংক্রান্ত বিষয়ে করিমগঞ্জের মাননীয় পুলিশ সুপার পদ্মনাভ বরুয়া মহাশয়ের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তানজিমুল মাদারিসিল ইসলামীয়াহ (নদওয়াতুত তামীর পরিচালিত) ও অল আসাম তনজিম মাদারিসে ক্বওমীয়া ( জমিয়ত উলামা পরিচালিত) উভয় সংগঠণের প্রতিনিধিবৃন্দ।

*লাফাশাইল তৈয়ীবিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক জলসা ১৭ ই জানুয়ারি* ◆আল্লামা তৈয়ীবুর রহমান বড়ভুইয়া স্মৃতি এওয়ার্ড পাচ্ছেন – করিমগঞ্জের ডিএসপি জেমস্ ◆ করিমগঞ্জ জেলার ভারত-বাংলা সীমান্তবর্তী লাফাশাইল মোহাম্মাদীয়া তৈয়ীবিয়া আলিয়া ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১৮ তম বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে বিশাল ইসলামী সমাবেশ ও জলসায়ে দস্তারবন্দী আগামী ১৭ ই জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার মাদ্রাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। এতে পৌরহিত‍্য করবেন মাদ্রাসা প্রধান মাওলানা আব্দুর রহমান সাহেব। প্রধান অতিথি হিসেবে শুভাগমণ করবেন উত্তর পূর্ব ভারতের আমীরে শরীয়ত তথা অত্র মাদ্রাসার মুহতামিম হযরত মাওলানা ইউসুফ আলী সাহেব। মুখ‍্য অতিথি হিসেবে আসন অলংকৃত করবেন করিমগঞ্জ জেলা এমারতে শরয়ীয়াহ ও নদওয়াতুত তামীরের সভাপতি তথা মুহাদ্দিস আল- জামিয়া বদরপুর হযরত মাওলানা মুফতি আব্দুল বাসিত ক্বাসিমী সাহেব। বিশেষ অতিথিদ্বয় যথাক্রমে – হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ সাহেব, সভাপতি ত্রিপুরা রাজ‍্যিক এমারতে শরয়ীয়াহ ও নদওয়াতুত তামীর ও হযরত মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেব, শিক্ষক ফয়জুল উলুম মোহাম্মাদীয়া রায়পুর। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মিঃ জেমস্ এ, সঙ্গাতে মহাশয়, মাননীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার করিমগঞ্জ। এছাড়াও বরাক উপত‍্যকার বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীমহলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এবারে এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা তথা ইসলামী বিদগ্ধ পণ্ডিত ভূতপূর্ব আমীরে শরীয়ত আল্লামা তৈয়ীবুর রহমান বড়ভুইয়া সাহেব (রহঃ) এর স্মৃতি রক্ষার্থে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা ব‍্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। তাই ইতিপূর্বে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এবারে করিমগঞ্জের মাননীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিঃ জেমস্ এ, সঙ্গাতে মহাশয়কে ডক্টর আল্লামা তৈয়ীবুর রহমান বড়ভুইয়া (রহঃ) মেমোরিয়াল এওয়ার্ড-২০২৩ পুরস্কারে ভূষিত করবে। মাদ্রাসা পরিচালনা সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আব্দুল ওয়ারিস ওই মাহফিলকে সর্বাত্মক সফল করতে সর্বসাধারণের উপস্থিতি ও সর্বাঙ্গীন সহযোগিতা কামনা করেছেন।